পড়ালেখাব্যবসায় শিক্ষা বিভাগসর্বশেষহিসাববিজ্ঞান ১ম

ভুল সংশোধনী দাখিলা

শিক্ষার্থীদের সুবিধার্থে ভুল সংশোধনী দাখিলা সংক্রান্ত কতিপয় বিশেষ দ্রষ্টব্য

৪র্থ অধ্যায়: রেওয়ামিল (ভুল সংশোধন দাখিলা) । হিসাববিজ্ঞান প্রথমপত্র। 

ভুল-সংশোধনী দাখিলা নিয়ে বিগত বছরগুলোতে বিভিন্ন বোর্ড পরীক্ষায় প্রশ্ন থাকছে। পরীক্ষার খাতা মূল্যায়ন করতে গিয়ে লক্ষ্য করেছি সামান্য অসর্তকতার জন্য ভুল-সংশোধনী দাখিলা প্রদানে শিক্ষার্থীরা ভুল করছে। তাই শিক্ষার্থীদের ভুল-সংশোধনী দাখিলা প্রদানের সময় নিচের টিপসগুলি মাথায় রেখে সমস্য-সমাধানের পরামর্শ দেওয়া যাচ্ছে।  

  • যদি প্রশ্নে সংশোধনী দাখিলার সময় উল্লেখ না থাকে তবে তা রেওয়ামিল প্রস্তুতের পর কিন্তু আর্থিক বিবরণী প্রস্তুতের পূর্বে সংশোধন করা হচ্ছে এটা মনে করে সমাধান করা বাঞ্ছনীয়। তবে এ ব্যাপারে অবশ্যই টীকা  প্রদান করতে হবে।
  • অংকে যদি কোন নির্দিষ্ট হিসাবখাতের ভুলের কথা উল্লেখ থাকে সেক্ষেত্রে অপর হিসাবখাতটি কি করা হয়েছে তা নিয়ে চিন্তা করার প্রয়োজন নেই।  মনে করতে হবে অপর হিসাবখাতটি সঠিক রয়েছে।
  • কোন নির্দিষ্ট হিসাবে লিপিবদ্ধ করার ভুল হলে মনে করতে হবে জাবেদা থেকে খতিয়ানে স্থানান্তর করার সময় এ ভুল হয়েছে।

একতরফা ভুল:

  • যে কোন হিসাব বা প্রাথমিক হিসাব বইয়ের যোগফল নির্ণয়ে ভুল হলে একতরফা ভুল হয়েছে মনে করে সংশোধনী দাখিলা প্রদান করতে হবে।
  • কোন নির্দিষ্ট হিসাবের সঠিক দিকে টাকার অংক কম বা বেশি লিপিবদ্ধ করার ভুল হলে একতরফা ভুল হয়েছে মনে করতে হবে। এক্ষেত্রে প্রকৃত ও লিখিত অংকের পার্থক্য দ্বারা সংশোধনী দাখিলা দিতে হবে। যেমন : (i) হাবিবকে প্রদত্ত ৪,০০০ টাকা ভুলক্রমে তার হিসাবে ৪০০ টাকা লেখা হয়েছে। এক্ষেত্রে (i) নং ভুলের জন্য (৪০০০- ৪০০) = ৩,৬০০ টাকা দ্বারা এবং (ii) নং ভুলের জন্য (৫০,০০০ – ৫,০০০) = ৪৫,০০০ টাকা দ্বারা দাখিলা দিতে হবে।
  • কোন নির্দিষ্ট হিসাবের বিপরীত দিকে লিপিবদ্ধ করার ভুল হলে একতরফা ভুল হয়েছে মনে করতে হবে। এক্ষেত্রে প্রকৃত ও লিখিত অংকের সমষ্টি দিয়ে সংশোধনী দাখিলা দিতে হবে। যেমন: (i) জাফরকে ৫০০ টাকা প্রদান করে তার হিসাবে ক্রেডিট করা হয়েছে এবং (ii) রাশেদ এর নিকট থেকে ১,৫০০ টাকা পেয়ে তার হিসাবে ১,০০০ টাকায় ডেবিট করা হয়েছে। এক্ষেত্রে (i) নং ভুলের জন্য (৫০০ + ৫০০) = ১,০০০ টাকা দ্বারা এবং (ii) নং ভুলের জন্য (১,৫০০ + ১,০০০) = ২,৫০০ টাকা দ্বারা সংশোধনী দাখিলা দিতে হবে।
  • কোন লেনদেন ইহার কোন একটি হিসাবে লিপিবদ্ধ না হলে একতরফা ভুল হয়েছে মনে করতে হবে এবং এর জন্য প্রয়োজনীয় সংশোধনী দাখিলা প্রদান করতে হবে।

দু’তরফা ভুল:

  • প্রাথমিক হিসাব বইয়ে টাকার অংক কম বা বেশি লিপিবদ্ধ করার ভুল হলে দুতরফা ভুল হয়েছে মনে করতে হবে। এক্ষেত্রে প্রকৃত ও লিখিত অংকের পার্থক্য দ্বারা সংশোধনী দাখিলা দিতে হবে। কম অংক লিপিবন্ধ হলে পার্থক্য দ্বারা পূর্বের দাখিলার অনুরূপ অর্থাৎ সঠিক দাখিলা দিতে হবে এবং বেশি অংক লিপিবদ্ধ হলে পার্থক্য দ্বারা বিপরীত দাখিলা দিতে হবে । যেমন : (i) জনীর নিকট হতে ১,০০০ টাকার পণ্য ক্রয় করে বইতে ১০০ টাকা লিপিবদ্ধ হয়েছে।(ii) রাসেল এর নিকট ৫০০ টাকার পণ্য বিক্রয় করে বিক্রয় বইতে ৫,০০০ টাকা লিপিবদ্ধ হয়েছে। এক্ষেত্রে (i) নং ভুলের জন্য (১০০০-১০০) = ৯০০ টাকা দ্বারা সঠিক দাখিলা এবং (ii) নং ভুলের জন্য (৫,০০০-৫০০) = ৪,৫০০ টাকা দ্বারা বিপরীত দাখিলা দিতে হবে।
  • প্রাথমিক হিসাবের বই পরিবর্তনে করে কোন লেনদেন লিপিবদ্ধ করা হলে দু’তরফা ভুল হয়েছে মনে করে সংশোধনী দাখিলা দিতে হবে। যেমন : ধারে পণ্য ক্রয় সংক্রান্ত লেনদেন বিক্রয় বইতে অথবা ক্রয় ফেরত বইতে লিপিবদ্ধ করার ভুল।
  • এক হিসাবখাতের পরিবর্তে অন্য হিসাবখাতে সঠিক পরিমাণে লিপিবদ্ধ করা হলে দু’তরফা ভুল হয়েছে মনে করতে হবে। এক্ষেত্রে ভুল হিসাবখাতটিকে বিপরীত দিকে এবং প্রকৃত হিসাবখাতটিকে সঠিক দিকে লিখে সংশোধনী দাখিলা দিতে হবে।
  • কোন লেনদেন হিসাবের বইয়ে লিপিবদ্ধ না হলে দু’তরফা ভুল হয়েছে মনে করতে হবে। এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট স্বাভাবিক দাখিলা প্রদান করলেই ভুল সংশোধন হয়ে যাবে।

চলবে…..

Related Articles

Leave a Reply

Back to top button