২০২৪ শিক্ষাবর্ষের ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণির বিষয়ভিত্তিক ষান্মাসিক সামষ্টিক মূল্যায়ন কার্যক্রমের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রস্তুতিমূলক নির্দেশনা দিয়েছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)। গত ১২ জুনের এ সংক্রান্ত নির্দেশনা মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতর, কারিগরি শিক্ষা অধিদফতর, মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদফতর ও প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালককে পাঠানো হয়। বৃহস্পতিবার (১৩ জুন) অধিদফতরগুলো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নির্দেশনা বাস্তবায়নের নির্দেশনা পাঠায়।
এনসিটিবির নির্দেশনায় জানানো হয়, ২০২৪ শিক্ষাবর্ষে সারা দেশের মাধ্যমিক পর্যায়ের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ষষ্ঠ বেকে নবম শ্রেণিতে জাতীয় শিক্ষাক্রম ২০২২ এর আলোকে মূল্যায়ন কার্যক্রম পরিচালনার তথ্য জানানো হয়েছে। এরজন্য ইতোমধ্যে মূল্যায়নের সময়সূচি ঠিক করা হয়েছে। ষান্মাসিক সামষ্টিক মূল্যায়নের আওতায় যেসব অধ্যায় বা শিখন অভিজ্ঞাসমূহ নেওয়া হয়েছে তার একটি বিষয়ভিত্তিক তালিকাও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বরাবর পাঠানো হয়েছে।
প্রতিষ্ঠানের জন্য নির্দেশনা:
১) জাতীয় শিক্ষাক্রম ২০২২ এর আলোকে আগামী ৩ জুলাই থেকে ৩০ জুলাই পর্যন্ত যষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণির ষান্মাসিক সামষ্টিক মূল্যায়ন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। মূল্যায়ন কার্যক্রম পরিচালনার সময়সূচি এবং বিষয়ভিত্তিক সর্বশেষ কোনও অভিজ্ঞতা/অধ্যায় পর্যন্ত ষান্মাসিক সামষ্টিক মূল্যায়নের আওতায় আসবে তা ইতোমধ্যেই পাঠানো হয়েছে।
২) ষান্মাসিক সামষ্টিক মূল্যায়ন কার্যক্রম শুরুর আগেই অর্থাৎ আগামী ৩ জুলাইয়ের মধ্যে সম্পাদিত সব বিষয়ের শিখন অভিজ্ঞতার পারদর্শিতার নির্দেশকগুলো নৈপুণ্য অ্যাপে ইনপুট দিতে হবে।
৩) মূল্যায়ন কার্যক্রম চলাকালীন অর্থাৎ ৩ জুলাই থেকে ৩০ জুলাই পর্যন্ত নির্দিষ্ট দিবসে মূল্যায়ন কার্যক্রম ছাড়া ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণির কোনও শ্রেণি কার্যক্রম পরিচালনা করা যাবে না।
৪) পাঠানো সময়সূচি অনুসারে নির্ধারিত দিনে একটি বিষয়েরই মূল্যায়ন অনুষ্ঠিত হবে। অর্থাৎ নির্ধারিত বিষয়ের মূল্যায়ন কার্যক্রম নির্ধারিত দিনেই শেষ করতে হবে। আগের মতো কোনও শ্রেণির একটি বিষয়ের মূল্যায়ন কার্যক্রম একাধিক দিনে সম্পন্ন করা যাবে না।
৫) বিষয়ভিত্তিক মূল্যায়ন কার্যক্রম নির্ধারিত দিনে সর্বোচ্চ পাঁচ ঘণ্টার মধ্যে সম্পন্ন করতে হবে। তবে মূল্যায়ন কার্যক্রমের ওপর নির্ভর করে একটি মধ্যবর্তী বিরতি দেওয়া যেতে পারে।
৬) মূল্যায়ন কার্যক্রমে হাতে-কলমে কাজ এবং কার্যক্রমভিত্তিক লিখিত অংশ উভয় ধরনের কার্যক্রম আছে। হাতে-কলমে কাজের জন্য প্রয়োজনীয় উপকরণ এবং লিখিত অংশের জন্য প্রয়োজনীয় খাতা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে সরবরাহ করতে হবে।
৭) বিষয়ভিত্তিক মূল্যায়নে উপকরণে বৈচিত্র রয়েছে যা বিস্তারিত মূল্যায়ন নির্দেশিকায় উল্লেখ করা থাকবে। মূল্যায়ন কার্যক্রম পরিচালনার জন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান উপকরণ সরবরাহের জন্য সাধারণ নির্দেশনা হচ্ছে—
# মূল্যায়ন কার্যক্রমে হাতে-কলমের কাজের জন্য উপকরণ হচ্ছে শিক্ষার্থীর সংখ্যা বিবেচনায় সাদা/রঙিন কাগজ, সাইন পেন, কাঁচি, আঠা বা গাম ইত্যাদি। লিখিত অংশের মূল্যায়ন কার্যক্রমের জন্য ১৬ পাতার খাতা, প্রয়োজনে অতিরিক্ত পাতা সরবরাহ করতে হবে।
# সরবরাহ করা মূল্যায়নপত্র থেকে শিক্ষার্থীর নির্দেশনা ও মূল্যায়ন/প্রশ্নপত্র অংশটি ফটোকপি করে সব শিক্ষার্থীকে সরবরাহ করতে হবে।
৮) উপকরণ সরবরাহের ক্ষেত্রে মনে রাখতে হবে কোনও উপকরণই যেন ব্যয়বহুল না হয়। রিসাইকেল, রিউইজ, আপসাইকেল উপকরণ ব্যবহার করতে হবে।
৯) অভিভাবক বা শিক্ষার্থীকে উপকরণ সরবরাহের জন্য কোনও নির্দেশনা দেওয়া যাবে না।
১০) মূল্যায়ন কার্যক্রম পরিচালনার জন্য শিক্ষার্থীদের অভিভাবকের কাছ থেকে সীমিত পরিমাণে মূল্যায়ন কার্যক্রম পরিচালনা ফি নেওয়া যেতে পারে।
১১) মূল্যায়ন কার্যক্রম পরিচালনার জন্য মূল্যায়ন নির্দেশনা মূল্যায়ন কার্যক্রম শুরুর আগের দিন নৈপুণ্য অ্যাপের প্রতিষ্ঠান ড্যাসবোর্ড (master.noipunno.gov.bd) এবং সংশ্লিষ্ট অধিদফতরের ওয়েবসাইটে পাওয়া যাবে। বিষয়ভিত্তিক মূল্যায়ন নির্দেশনা মূল্যায়ন কার্যক্রমের সময়সূচি অনুসারে নির্ধারিত দিনের আগের দিন পাওয়া যাবে।
১২) মূল্যায়ন নির্দেশনায় শিক্ষকের জন্য করণীয়, শিক্ষার্থীদের জন্য করণীয়, মূল্যায়নপত্র, শিক্ষকের জন্য পর্যবেক্ষণ চেক লিস্ট এবং মূল্যায়ন কার্যক্রম পরিচালনার জন্য বিষয়ভিত্তিক উপকরণের বিবরণ থাকবে।
১৩) ষান্মাসিক সামষ্টিক মূল্যায়ন কার্যক্রম পরিচালনা শেষে শিক্ষার্থীর অর্জিত পারদর্শিতার রেকর্ডের ভিত্তিতে নৈপুণ্য অ্যাপে পারদর্শিতার নির্দেশক (পিআই) নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ইনপুট দিতে হবে।