বাংলা ১মসর্বশেষ

প্রাক-নির্বাচনি পরীক্ষার প্রস্তুতিঃ ক্লাস-০২

বাংলা প্রথম পত্র

দ্বাদশ শ্রেণি

বিষয়: আমি কিংবদন্তির কথা বলছি

রচয়িতা: আবু জাফর ওবায়দুল্লাহ (১৯৩৪–২০০১ )

শিখনফলঃ এ কবিতাটি পড়ে জানবো-

  • ১। গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাসের কথা
  • ২। ঐতিহ্য সচেতন শিকড় সন্ধানী মানুষের প্রতি অনুরাগ 
  • ৩। বাঙালি সংস্কৃতির হাজার বছরের ইতিহাসবোধ সৃষ্টি 
  • ৪। মাতৃভূমির প্রতি গভীর অনুরাগ সৃষ্টি
  • ৫। মুক্তিযোদ্ধাদের সম্পর্কে জানার আগ্রহ সৃষ্টি
  • ৬। আবু জাফর ওবায়দুল্লাহর জীবন ও সাহিত্য সম্পর্কে জানতে পারবো।

রচনার উৎসঃ

কবিতাটি আবু জাফর ওবায়দুল্লাহর বিখ্যাত কাব্যগ্রন্থ ” আমি কিংবদন্তির কথা বলছি” কাব্য গ্রন্থের নাম কবিতা।

কবির পরিচয়ঃ

  • নামঃ আবু জাফর ওবায়দুল্লাহ
  • জন্মঃ ১৯৩৪ খ্রিষ্টাব্দেরে ৮ ফেব্রুয়ারি, গ্রাম: বহেরচর ক্ষুদ্রকাঠি, উপজেলা: বাবুগঞ্জ, জেলা: বরিশাল,
  • বাবার নামঃ আব্দুল জব্বার খান
  • শিক্ষা জীবন ও কর্মজীবনঃ ইংরেজি সাহিত্যে বি এ (সম্মান) সহ এম এ পাশ করে কিছুদিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা করেন। পরে বাংলাদেশ সরকারের সচিব, ১৯৮২ খ্রিষ্টাব্দে বাংলাদেশ সরকারের কৃষি ও পানি সম্পদ মন্ত্রী, ১৯৮৪ তে আমেরিকায় বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত, FAO-এর পরিচালক এবং সেখান থেকে অবসর গ্রহণ ।
  • কবিতায় উঠে এসেছে রাষ্ট্র ভাষা আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধ

সাহিত্য প্রকৃতিঃ

সাতনরী হার (১৯৫৫), কখনো রং কখনো সুর (১৯৭০), কমলের চোখ (১৯৭৪), আমি কিংবদন্তির কথা বলছি (১৯৮১), সহিষ্ণু প্রতীক্ষা (১৯৮২), প্রেমের কবিতা (১৯৮২), বৃষ্টি ও সাহসী পুরুষের জন্য প্রার্থনা (১৯৮৩), আমার সময় (১৯৮৭), নির্বাচিত কবিতা (১৯৯১), আমার সকল কথা (১৯৯৩), মসৃণ কৃষ্ণ গোলাপ( ২০০২), Yellow Sands’Hills:China Through Chinese Eyes, Rural Development: Problems and Prospects (Tom Hexner এর সঙ্গে যৌথভাবে); Creative Development Food and Faith. 

#তিনি “পদাবলি” নামে কবিদের একটি সংগঠন প্রতিষ্ঠা করেন। সংগঠনটি আশির দশকে দর্শনীয় বিনিময়ে কবিতা সন্ধ্যার আয়োজন করত।

পুরস্কার প্রাপ্তিঃ 

বাংলা একাডেমি পুরস্কার( ১৯৭৯), একুশে পদক (১৯৮৫), 

পাঠ আলোচনাঃ

“আমি কিংবদন্তির কথা বলছি” কবিতায় কবি ব্যক্ত করেছেন ঐতিহ্য সচেতন শিকড়সন্ধানী মানুষের দৃপ্ত ঘোষণা। বাঙালি সংস্কৃতির হাজার বছরের ইতিহাস, এই জাতির সংগ্রাম, বিজয় ও মানবিক উদ্ভাসনের চমৎকার অনুষঙ্গসমূহ কবি গভীর ব্যঞ্জনা নিয়ে প্রকাশ পেয়েছে। কবি তাঁর পূর্ব পুরুষের সাহসী ও গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাসের কথা উপস্থাপনের মধ্য দিয়ে তাঁর বক্তব্যকে এগিয়ে নিয়ে চলেন।কবির বর্ণিত এ ইতিহাস মাটির কাছাকাছি মানুষেরই ইতিহাস; বাংলার ভূমিজীবী অনার্য ক্রীতদাসের লড়াই করে টিকে থাকার বাস্তব ইতিহাস। কবি তাঁর কবিতায় আরো ব্যক্ত করেছেন পরিবারের সকলের ভালোবাসার অনিন্দ্য কথা। সবচেয়ে স্মরণ্য বিষয় মুক্তির পূর্ব শর্ত হচ্ছে যুদ্ধ, যুদ্ধ করেই আমাদের স্বাধীন এক জীবন ও জগৎ সৃষ্টি করে নিতে হবে।

আরেকটু বিস্তার দিতে চাই এ কবিতাটির ভেতরে কোন ধরণের গূঢ় রহস্য অবিচ্ছেদ্যভাবে ক্রিয়াশীল: খেয়াল করো প্রিয় শিক্ষার্থী কবিতাটির আঙ্গিক বিবেচনা, প্রথমেই পাঠক হিসেবে নাড়া দেবে তা হল; একই ধাঁচের বাক্যের বারংবার ব্যবহার। কবি একদিকে “আমি কিংবদন্তির কথা বলছি” পঙক্তিটি বারংবার প্রযোগ করেছেন, অন্য দিকে “যে কবিতা শুনতে জানে না/ সে—” কাঠামোর পঙক্তিমালার ধারাবাহিক উপস্থাপনের মধ্য দিয়ে #কবিতা আর #মুক্তির আবেগকে তিনি একত্রে শিল্পরূপ প্রদান করেছেন। আমরা আরো খেয়াল করবো কবিতায় “কিংবদন্তি” শব্দবন্ধটি আমাদের চেতনায় ঐতিহ্যের প্রতীকে মূর্ত হয়ে উঠেছে। কবি এই নান্দনিক কৌশলের সঙ্গে সমন্বয় ঘটিয়েছেন চিত্রকল্পের অনিন্দ্য রূপকল্প যা গভীরভাবে সঞ্চারিত হয়ে অন্তর্গত স্পন্দনে।

কবিতার সার্থকতাঃ 

আমরা জানি একটি কবিতার শিল্পত্ব অর্জনের পূর্বশর্ত হলো হৃদয়স্পর্শী চিত্রকল্পের যথোপযুক্ত ব্যবহার। চিত্রকল্প হলো এমন শব্দছবি যা কবি গড়ে তোলেন এক ইন্দ্রিয়ের কাজ অন্য ইন্দ্রিয়ের সাহায্যে করিয়ে কিংবা একাধিক ইন্দ্রিয়ের সম্মিলিত আশ্রযে; আর তা পাঠক হৃদয়ে সংবেদনা জাগায় ইন্দ্রিয়াভীত বোধের প্রকাশমঞ্জরীতে।

“চিত্রকল্প নির্মাণের আরেকটি শর্ত হলো “অভিনবত্ব” । এ সকল মৌল শর্ত পূরণ করেই এ কবিতার চিত্রকল্প নির্মাণ পেয়েছে নান্দনিকভাবে।

কবি যখন উচ্চারণ করেন “কর্ষিত জমির প্রতিটি শষ্যদানা কবিতা”; তখন জমির দানা আর কবিতার শব্দখেলা যেন অনন্য রূপকল্প তৈরি করে এক ইন্দ্রিয় হতে ইন্দ্রিয়াতীভ দ্যোতনার সক্ষরণ ঘটে। সার্বিক বিবেচনায় কবিতাটি বিষয় ও আঙ্গিক নিপূণতায় বাংলা কাব্য সাহিত্যের নন্দন অঞ্চলে সন্দেহাতীতভাবে একটি পাঠ আনন্দনের সৌকর্য সংযোজন।

ছন্দ: কবিতাটি গদ্য ছন্দে রচিত

বাসায় চর্চার জন্য সৃজনশীল প্রশ্নঃ 

নদীর দুপাশে ঘন গাছগাছালি

ছায়ায় সুনিবিড় যেমন

মনে হতো ছাতা মাথায় দিয়ে বয়ে চলেছে

নীরব নদীর জল

আমার নরম নরম কাঙ্ক্ষিত প্রেমহৃদয়

তখন সঙ্গে চলে নিঃসঙ্গ অলোমন

ক) কবির পূর্বপুরুষের করভলে কিসের সৌরভ ছিল

খ)”ভালোবাসা দিলে মা মরে যায়” বলতে কবি কী বুঝিয়েছেন?

গ) উদ্দীপকে উদ্ধৃত “নীরব নদীর জল” এবং কবিতায় উচ্চারিত ” পলিমাটির সৌরভ” একই অর্থ বহন করে কি না আলোচনা কর।

ঘ) উদ্দীপকটিতে “আমি কিংবদন্তির কথা বলছি” কবিতার রূপ প্রকাশ করে কি? বিশ্লেষণ কর।

“পড়ালেখার সাথে যতগভীর সম্পর্ক রাখবে, ততই জীবনের সফলতা তোমাকে ছুঁয়ে দেবে।”


মুহাম্মদ রুহুল কাদের, সহকারী অধ্যাপক, বাংলা বিভাগ, বেপজা পাবলিক স্কুল ও কলেজ, চট্টগ্রাম ইপিজেড। মোবাইল# ০১৭১২ ৬১৮১৬৯।

Related Articles

Leave a Reply

Back to top button